“ তোমাকে যে চাহিয়াছে একদিন, সে জানে তোমাকে ভোলা কত যে কঠিন” কাজী নজরুল ইসলামের এই কথা বাংলাভাষী মানুষদের আপনজনের প্রতি চাহিদার কথা ফুটে উঠেছে। তবে সেই আপনজন হতে পারেন একজন, যাকে কখনও দেখা হয়নি, ছোয়া হয়নি, যোগাযোগ হয়নি৷ তবে টান রয়ে গেছে মনের ভিতর। নেইমার জুনিয়ারের প্রতি ব্রাজিল ভক্তদের আবেগ যেন সেখানেই।
রাফিনহা তো বলেই ফেলেছেন, নেইমারকে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে দেখা এক কষ্টের ব্যাপার। নেইমারের মাঠে ফেরা নেইমার ও ফুটবলের জন্যই দারুণ এক কিছু। নিজের সেরা সময়েও নেইমারকে ভুলেননি রাফিনহা৷ নেইমারকে যে ভুলতে পারেনি কোটি ব্রাজিলিয়ান ভক্তরা।
হেডলাইনে তাই ছয়লাব কবে নেইমার ফিরবেন, কবে মাঠে দেখা যাবে এই ব্রাজিলিয়ানকে। কখনও ইঞ্জুরি থেকে ফিরেন জিমে, কখনও রিহ্যাবে। আবারো কখনও সতীর্থদের সাথে থাকেন অনুশীলনে। নেইমারকে নিয়ে আলোচনা থাকে সর্বদা। তবে এক বছরে নেইমারকে মাঠে দেখার স্বাদ যে মিটেছে না! এইতো মাত্র ৬ দিন পরই ব্রাজিলের জার্সিতে মাঠে দেখার কথা,ঠিক তখনি আবারো ছিটকে গেলেন,নিজের জীবনটা যেন দুইভাগ ইঞ্জুরী আর এক ভাগ দিলেন ভক্তদের!
সান্তোসে নেইমার ফিরবেন, ঘরের ছেলে আবারো আসবেন ঘরে। সেই খবর ভক্তদের পুলকিত করেছিলো বটে, তবে এর চেয়েও পুলকিত করেছিলো নেইমারের মাঠে ফেরা। নেইমারকে নিয়ে সব প্রত্যাশার বাইরে ভক্তদের আশা নেইমার আবার ফিরুক মাঠে, তার আপন মহিমায়।
কবি জসিমউদদীনের বহুকাল আগে ফুটবল খেলোয়ড়ের কবিতা লিখেন। বাম পায়ে ড্রিবলিং করে ডান পায়ে গোল দেওয়া ইমদাদ হকের গল্প লিখেন। লিখেন মাঠে দর্শকদের আনন্দ দেওয়া ইমদাদ হকের ভিতরের গল্প৷ বহু বছর পর দর্শকরা ইমদাদ হকে নেইমারকে পান। একের পর এক ইঞ্জুরি, বেদনা যাকে গ্রাস করে, যিনি ফিরে আসেন ভক্তদের জন্য।এবারওতো স্বপ্ন ছিলো এমনই,তবে দুস্বপ্ন হয়ে আবারো আসলো সেই ইঞ্জুরীর সেজে ভয়ানক হায়না!
এক ম্যাচে ১৫ ড্রিবলিং করা নেইমার, ভক্তদের মনে গেথেছেন, ডি পল, এমি মার্টিনেজদের কাছে মনস্টার নেইমার ভক্তদের মনে গেথেছেন। ইয়ামাল, ভিনিদের বড় হওয়ার গল্পে নেইমার গেথেছেন। নেইমার যে মিশে আছেন ফুটবল আবেগে। এই নেইমারকে কিভাবে তাই ভোলা যায়।
নেইমার ফিরবেন, ১২০ বাই ৮০ গজের মাঠে জাদু দেখাবেন। হয়ত হলুদ জার্সি পড়ে বিশ্বকাপের সোনার ট্রফিতে চুম্বন দিবেন। তবে সেইসব যদি না’ও হয় তবুও হয়তো ঐ তিন ভাগের এক ভাগ নিয়েই সন্তস্ট থাকতে হবে নেইমি ভক্তদের…..