ফারুক আহমেদ ভালো নাকি মন্দ?দেশের ক্রিকেটের সাবেক এই অধিনায়ক সততার প্রমান দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক হিসেবেও,তবে বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন ওঠে ফারুক আহমেদ যা করেন তা সাহসিকতা?
নাকি সেচ্ছাচারিতা?বিপিএলে তার সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ব জুড়ে ধুলোই মিশেছে দেশের ক্রিকেট তথা দেশের সম্মান।
এরপরই শুরু হয় তার ব্যাংকে টাকা সড়ানোর অপ্রয়োজনীয় ও সেচ্ছাচারিতা নিয়ে সমালোচনা।
যদকোনোভাবে দুদকের সবুজ বাতি জ্বলার পরই,
সমকালের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরো কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিসিবির সাবেক এই সভাপতি তার দায়িত্বকালীন সময়ে ১৩টি ব্যাংকে মোট ৯৫ কোটি টাকা নতুন করে এফডিআর করেছিলেন।
এর মধ্যে কিছু ব্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়, এমনকি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগও ওঠে, যদিও পরে সেটি ভুল প্রমাণিত হয়।
তবুও তিনি যে ব্যাংকে ৫২ কোটি টাকা এফডিআর করে গেছেন, সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সবুজ তালিকায় থাকলেও বাস্তবে বিসিবির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যা গত এক মাসে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ক্রিকেট বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাদ দিয়ে সমকাল জানিয়েছে , বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ব্যাংকের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা করে চেয়েছিলেন। একটি ব্যাংক তা দিতে পারলেও অন্যটি ব্যর্থ হয়।
অথচ ব্যর্থ হওয়া ব্যাংকটিতেই ৫২ কোটি টাকা এফডিআর করেছিলেন ফারুক আহমেদ। মূলত বেশি মুনাফার লোভে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে টাকা রাখা হয়েছিল।
টাকা ফেরতের অনিশ্চয়তায় বিসিবি কর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যে ব্যাংক এক মাসেও দুই কোটি টাকা ফেরত দিতে পারে না, মেয়াদ শেষে অর্ধশত কোটি টাকা কীভাবে ফেরত দেবে?”
বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা হালনাগাদ করেছিল।
ফারুক আহমেদ বিসিবির সভাপতি হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে নিরাপদ ব্যাংকে স্থানান্তর করা হবে এবং দ্রুতই সে সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছিলেন।
তবে এ প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক জনতা, অগ্রণী ও রূপালী থেকে অর্থ সরিয়ে কিছু হলুদ, সবুজ এমনকি লাল তালিকাভুক্ত ১৩টি ব্যাংকে মোট ২৩৮ কোটি টাকা এফডিআর করা হয়।
এর মধ্যে মধুমতি , ইস্টার্ন , ব্র্যাক , মিউচুয়াল ট্রাস্ট, প্রাইম , সিটি , মেঘনা , পূবালী , অমনী , বেঙ্গল কমার্শিয়াল ও সিটিজেনস ব্যাংক রয়েছে।
এসব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ২ থেকে ৫ শতাংশ মুনাফার লোভ দেখানো হয়েছিল এবং এর ফলে বিসিবি ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপও পায়।
সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা মধুমতি ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংককে ঘিরে, যেখানে মোট ১১৬ কোটি টাকা এফডিআর রয়েছে।
আগামী বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে এই টাকা ফেরত পেতে বিসিবি সমস্যায় পড়তে পারে বলে শঙ্কা কর্মকর্তাদের।
একজন পরিচালক বলেন, “একটি ব্যাংক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টিকিট স্পনসর করে, তারা হয়তো সময়মতো টাকা ফেরত দেবে।
কিন্তু অন্য ব্যাংকের অবস্থা ভালো নয়, তারাতো পরীক্ষায়ও ফেল। বিসিবির টাকা কেউ না নিলেও ঝুঁকিতে ফেলার অধিকার কারও নেই।”
অর্থাৎ যেখানের রিপোর্টে যাই বলুক, দেশের ক্রিকেটের জন্য যে বেশ বড় অভিশাপ হয়ে এসেছিলেন ফারুক,তা বলার আর অপেক্ষা রাখেনা!




